শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) জেলায় ভূঞাপুরে ঘর থেকে সুলতানা সুরাইয়া নামের এক বৃদ্ধার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। একই উপজেলার মুনিয়া ইসলাম (৩৫) নামে এক প্রবাসীফেরত স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। অপরদিকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার নগরজলফৈ গ্রামের জিন্নত আলীর ছেলে খায়রুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, ১৫ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে ভূঞাপুর পৌর শহরের ঘাটান্দি গ্রামের গণেশ মোড় নামক এলাকায় জহুরুল ইসলামের পাঁচতলার বাসার তিনতলায় একটি ভাড়া বাসা থেকে মুনিয়া ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মুনিয়া ইসলাম পাশ্ববর্তী গোপালপুর উপজেলার নলিন বাজারের নুরল ইসলামের মেয়ে এবং তার স্বামী মোস্তাক আহমেদ একই উপজেলার বাগুয়াটা গ্রামের আজমত আলীর ছেলে।
তার আল মাসুদ (১০) এবং নবীন (৪) নামে দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে। এ ঘটনায় আল মাসুদ ও নবীনের প্রবাস ফেরত বাবা মোস্তাক আহমেদ পলাতক রয়েছেন।
মুনিয়া ইসলামের ভাই আমিনুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পারিবারিক ঝামেলা চলছিল স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। পরে বড় বোন নাসরিন আক্তার কয়েকদিন আগে দুইজনকে বুঝিয়ে মীমাংসা করে দিয়েছিল। এরপর আর কিছু জানি না। সন্ধ্যায় খবর পেলাম বোনের মরদেহ বাসার বক্সখাটের নিচে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ওর স্বামী মোস্তাক পালিয়েছে, এর বিচার চাই।
এ ছাড়া একই উপজেলার সুলতানা সুরাইয়া নামের এক বৃদ্ধার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার হয়। সুলতানা সুরাইয়া একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার নিউজ এডিটর আবু সায়েম আকন্দের মা।
আবু সায়েম আকন্দ বলেন, মা একাই থাকতেন বাড়িতে। কারও সাঙ্গে কোনো শত্রুতা নেই। সম্ভবত মাদকাসক্তরা চুরি করতে এসে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
এ বিষয় স্থানীয়রা জানায়, পশ্চিম ভূঞাপুর এলাকায় একাই বসবাস করতেন সুলতানা সুরাইয়া। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা ব্যবহৃত ফোন বন্ধ পেয়ে বাড়িতে গিয়ে ঘরের লাইট জ্বালানো ও ফ্যানের শব্দে সন্দেহ হওয়ায় গেট টপকে ঘরে উঁকি দেয়। এ সময় ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল তার গলাকাটা মরদেহ।
ভূঞাপুর থানার ওসি আহ্সান উল্লাহ জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া এ দুটি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে মুনিয়া ইসলামের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্বামী মোস্তাক আসামি করে মামলা হয়েছে এবং সাংবাদিকের মার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অজ্ঞাতনামায় মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত চলছে। দ্রুত দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
অপরদিকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার নগরজলফৈ গ্রামের জিন্নত আলীর ছেলে খায়রুলকে ছরিকাঘাত করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয় পৌর কাউন্সিল বিউটি বেগম জানান, পৌরসভায় জমি বুঝে পাওয়ার জন্য একটি আবেদন পড়ে। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার সকালে তিনিসহ পৌরসভার লোকজন জমি মাপতে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই মোতালেব নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে পৌরসভার লোকজনদের ওপর হামলা করে এবং মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেয়। এ সময় হামলাকারীরা খায়রুলকে ছুরিকাঘাত করলে তার পেট পুরোটা কেটে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় ডলি খানম নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার হাত কেটে যাওয়ায় তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয় টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি মো.আবু সালাম জানান, নিহতের স্ত্রী আটজনকে বাদী করে মামলা করেছেন। এর মধ্য আমরা তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। তবে মামলাটি দ্রুত তদন্ত করে আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।