বগুড়ার নন্দীগ্রামে নবান্ন উপলক্ষ্যে বসেছে মাছের মেলা

তাহানুল মারুফ
নভেম্বর ১৮, ২০২৩

Share Now

নবান্ন উপলক্ষ্যে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ওমরপুর ও রনবাঘায় বসেছে মাছের মেলা। এ মেলা থেকে বড় বড় মাছ কিনে শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। একদিনে এই মেলায় প্রায় ৭০ থকে ৮০ লাখ টাকার মাছ কেনা বেচা হয়। সকাল থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে মাছ কেনার জন্য প্রচুর পরিমাণ মানুষ মেলায় প্রাঙ্গনে আসছে। এ মাছের মেলায় বড় সাইজের মাছ নিয়ে আসে দোকানিরা বিশেষ করে কাতলা, বোলায়, রুই, চিতল, ব্রিগহেড জাতির মাছ দুর দুরান্ত থেকে নিয়ে আসে তারা। আজকের মেলায় ১২ থেকে ১৪ কেজি ওজনের বোয়াল, ব্রিগহেড, ৮-১০ কেজি ওজনের কাতলা, রুই, চিতল মাছ এসেছে। এছাড়াও ৪৫ কেজি ওজনের বাঘা আইড় মাছও এসেছে।

মেলায় সুন্দর করে থরে থরে সাজানো কাতলা, চিতল, সিলভার কার্প, রুই, ব্রিগহেড, বাঘাআইড়, বোয়ালসহ হরেক রকমের মাছ। সারি সারি দোকান। চলছে হাঁকডাক, দরদাম। দুই কেজি থেকে শুরু করে ২৫ কেজি ওজনের মাছ আছে এখানে। লোকজনও ব্যাপক উৎসাহের সঙ্গে কিনছেন এসব মাছ। অনেকেই আবার এসেছেন কেবল মাছ দেখতে।

জানা গেছে, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসবের পঞ্জিকা অনুসারে শনিবার অগ্রহায়ণের এইদিনে প্রতিবছর নবান্ন উৎসব পালন করা হয়। এ উৎসবকে ঘিরে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ওমরপুর, রণবাঘায় মাছের মেলা বসে। এছাড়া উপজেলার নাগরকান্দি, হাটকড়ই, ধুন্দার বাজারেও মাছের মেলা বসেছে। জেলে থেকে শুরু করে মাছ খামারি ও মাছ ব্যবসায়ীরা তাদের মাছ নিয়ে এনেছেন। মেলা উপলক্ষে উপজেলাজুড়ে প্রতিটি বাড়িতেই মেয়ে-জামাইসহ স্বজনদের আগে থেকেই দাওয়াত দেওয়া হয়।

১হাজার থেকে ১তশ টাকা কেজি দরে বোয়াল মাছ বিক্রি হচ্ছে। ২০০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিগহেড ও সিলভার কার্প মাছ বিক্রি হচ্ছে। রুই ও কাতলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি দরে। চিতল মাছ ওজন ভেদে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ৪৫ কেজি ওজনের বাঘা আইড় মাছ ১২০০ টাকা কেজি দরে দাম চাওয়া হচ্ছে।

এদিকে, মেলায় শীতকালীন হরেক রকমের সবজি ছড়াছড়ি। প্রতিবারের মতো এবারও ক্রেতা সমাগম চোখে পড়ার মতো। মাছের দামও অনেকটা স্বাভাবিক বলে জানান ক্রেতা ও বিক্রেতারা।

পৌর এলাকার বৈলগ্রামের মিঠু বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে অগ্রহায়ণ মাসের এইদিন মাছের মেলা বসে। দিন যতই যাচ্ছে এই মেলার ঐতিহ্য ততই বাড়ছে।’

মাছ বিক্রেতা মিলন বলেন, মেলায় ছোট-বড় মিলে প্রায় শতাধিক মাছের দোকান বসেছে। প্রত্যেক বিক্রেতা অন্তত ১০ থেকে ২০ মণ করে মাছ বিক্রি করেছেন। নামুইট গ্রামের অপর মাছ বিক্রেতা মিন্টু মিঞা বলেন, নবান্ন উৎসবকে ঘিরেই তারা মূলত মেলায় বড় বড় মাছ বিক্রি করতে আনেন। ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতা মাথায় রেখে তারা মাছের দাম নির্ধারণ করেন। এলাকা মানুষদের সঙ্গে খুব একটা দামাদামি করেন না।