রেমিট্যান্সে চার্জ কাটবে না ব্যাংক

মোঃ আশিকুর রহমান
নভেম্বর ৭, ২০২২

Share Now

প্রবাসীদের আয় বা রেমিট্যান্সে এখন থেকে আর কোনো ধরনের চার্জ নেবে না দেশের ব্যাংকগুলো। পাশাপাশি রেমিট্যান্স পাঠানোর সুবিধার্থে সপ্তাহের ছুটির দিনেও বিদেশে থাকা এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো খোলা থাকবে। এ সিদ্ধান্ত আজ সোমবার (৭ নভেম্বর) থেকে কার্যকর হয়েছে।

রবিবার (৬ নভেম্বর) ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) যৌথ সভায় সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়।

সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বাফেদার চেয়ারম্যান এবং সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও মো. আফজাল করিম, এবিবির চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেনসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা।

বৈঠক শেষে সোনালী ব্যাংকের এমডি আফজাল করিম জানান, বাফেদা ও এবিবি যৌথভাবে এ বৈঠক হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রেমিট্যান্সের উপর চার্জ মওকুফ করা হয়েছে। এখন থেকে ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্সে কোনো ধরনের চার্জ নেবে না। তারমানে কোনো ধরনের খরচ ছাড়াই বিদেশ থেকে প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারবেন। এছাড়া প্রবাসীরা যেন সপ্তাহের ৭ দিন রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেন এ জন্য ছুটির দিনও বিদেশে থাকা দেশের এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তিনি জানিয়েছেন, রফতানি আয় নগদায়নে ডলার রেট বাড়িয়ে ১০০ টাকা করা হয়েছে। এতদিন ৯৯ টাকা ৫০ পয়সা ছিল। তবে রেমিট্যান্সের রেট আগের মতো সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা বহাল রাখা হয়েছে। এসব সিদ্ধান্ত সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছে।

এর আগে ডলার সংকট নিরসনে গত ২৩ অক্টোবর প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের বিপরীতে ডলার কেনার সর্বোচ্চ দর ৫০ পয়সা কমিয়ে ১০৭ টাকা করা হয়। আর রফতানি বিল ৫০ পয়সা বাড়িয়ে করা হয় ৯৯ টাকা ৫০ পয়সা। যা গত ২৬ সেপ্টেম্বর এক সভায় ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা প্রবাসী আয়ে নির্ধারণ করা হয়। রফতানি আয়ে ৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

এছাড়া গত ১১ সেপ্টেম্বর প্রথম ব্যাংকারদের সভায় এক্সপোর্ট প্রসিডে ৯৯ টাকা ও রেমিট্যান্সের ডলার ১০৮ টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত হয়।

এখন বিদেশ থেকে যে কোনো পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠাতে কোনো ধরনের কাগজপত্র লাগে না। আবার প্রবাসী আয়ের ওপর আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার।

নানা পদক্ষেপ নিয়েও রেমিট্যান্স বাড়াতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স ধারাবাহিক কমছে। চলতি ২০২২-২৪ অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরে ১৫২ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। এই অংক গত ৮ সাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

প্রণোদনা বাড়ার পরও সর্বশেষ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে বড় পতন হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম।