সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে সন্তানকে হারানোর বিচার চেয়ে বাবার মামলা

তাহানুল মারুফ
সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৩

Share Now

কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্তে ছেলেকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় বিএসএফ’র নামে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে নিহতের পিতা। গতকাল মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে রৌমারী থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ রুপকুমার সরকার।

তিনি জানান, অজ্ঞাতনামা বিএসএফ’র নামে মামলাটি দায়ের করেছে নিহতের পিতা।

জানা গেছে, গত ৩ সেপ্টেম্বর রৌমারী উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা শৌলমারী ইউনিয়নের মোল্লারচর এলাকায় সীমানা পিলারের পাশে কাঁটাতারের উপর দিয়ে অবৈধভাবে গরু পাচার করা হচ্ছিল। এসময় টহলরত ভারতীয় কুচনীমারা ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা চোরা কারবারিদের লক্ষ্য করে পরপর ৪ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে।

এতে একই ইউনিয়নের বেহুলার চর গ্রামের আব্দুল বাতেনের ছেলে মানিক মিয়া (৩৫) বুকে ও কোমরে গুলিবিদ্ধ হয়ে ভারতীয় অভ্যন্তরে লুটিয়ে পরে। সঙ্গে থাকা লোকজন তাকে উদ্ধার করে রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে মামলার ভয়ে মৃত মানিক মিয়াকে রৌমারী উপজেলা শহরের বন্দবেড় ইউনিয়নের বাঞ্চারাম গ্রামে তার খালাতো ভাই আব্দুল মোত্তালেবের বাড়িতে লুকিয়ে রাখা হয়। পরে ১৬ ঘণ্টা পর মানিক মিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে রৌমারী থানা পুলিশ।

এ ঘটনায় নিহতের পিতা আব্দুল বাতেন রৌমারী থানায় উপস্থিত হয়ে অজ্ঞাতনামা বিএসএফ’র নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। নিহতের মরদেহ সুরৎহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহতের পিতা আব্দুল বাতেন বলেন, সীমান্তে আমার সন্তানের মত অনেক বাবা-মায়ের সন্তানকে বিএসএফ নির্দয়ভাবে গুলি করে হত্যা করছে। আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।

রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহত মানিক মিয়ার পিতা আব্দুল বাতেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা বিএসএফ’র নামে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রুহুল আমিন জানান, কিভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে, তা তদন্ত করে দেখে পরবর্তীকালে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

জামালপুর ৩৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মাশরুকি জানান, সীমান্তে গুলির ঘটনায় সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র সাথে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিএসএফ গুলির ঘটনা স্বীকার করেছে। আমরা সীমান্ত হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। মামলার ঘটনায় আমরা হেড কোয়ার্টারের সাথে যোগাযোগ করে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ায় যাবো।