এরদোগানই ফের ক্ষমতায়? রায় দিচ্ছে তুরস্ক

মোঃ আশিকুর রহমান
মে ১৪, ২০২৩

Share Now

তুরস্কে শক্তিশালী ভূমিকম্পে অর্ধলক্ষাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়ার তিন মাস পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ নির্বাচন মনে করা হচ্ছে এটিকে। দুই দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান আরেক মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকতে পারবেন কিনা এ নিয়ে রয়েছে নানা সংশয়। রোববারের ভোটে এরদোগানের ভাগ্য নির্ধারণ হবে। শুধু প্রেসিডেন্টই নন, সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলা ভোটে তুর্কিরা নতুন পার্লামেন্টের ৬০০ এমপিও ঠিক করবেন।

এবারের ভোটে এরদোগানের প্রধান প্রতিপক্ষ কামাল কিলিচদারোগলু, জয়ী হলে যিনি প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা কমানোর অঙ্গীকার করেছেন। ২০১৬ সালে ব্যর্থ এক অভ্যুত্থান চেষ্টার পর এরদোগান প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাকে একচ্ছত্র করেছিলেন।

কিলিচদারোগলুর পেছনে বিরোধীদের যে জোট আছে, সেটি বেশ বড় হওয়ায় তার জয়ের সম্ভাবনা প্রবল হলেও এরদোগানের সঙ্গে তার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এমন একসময়ে তুরস্কের প্রায় সাড়ে ৬ কোটি ভোটারকে তাদের নেতা বেছে নিতে হচ্ছে, যখন অর্থনৈতিকভাবে দুর্দশা মোকাবিলায় দেশটির বেশিরভাগ মানুষই হিমশিম খাচ্ছেন।

সরকারি হিসাবেই মূল্যস্ফীতি ৪৪ শতাংশে পৌঁছে গেছে। প্রকৃত অবস্থা এর চেয়েও ভয়ানক বলে দাবি অনেকের। তিন মাস আগের জোড়া ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত দেশটির ১১ প্রদেশের দশা সবচেয়ে খারাপ। এসব এলাকায় এরদোগানের ভোট কমবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। এবারের ভোটে নতুন ভোটার সংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ। নবীন ভোটারদের রায় বড় ব্যবধান গড়ে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জার্মানি, ফ্রান্স ও অন্যান্য দেশে থাকা প্রায় পৌনে দুই কোটি ভোটার এরই মধ্যে তাদের ভোট দিয়ে দিয়েছে। এবার প্রবাসী ভোটের হার ৫৩ শতাংশ, যা নতুন রেকর্ডও গড়েছে।

তবে ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত অনেকের পক্ষে এবার ভোট দেওয়াটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে। অনেকেই তাদের বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে, কিন্তু ভোট দেওয়া যাবে কেবল নিবন্ধিত এলাকা থেকেই।

ওই ভূমিকম্প পরবর্তী সরকারি তৎপরতা ও পুনর্বাসন এবার নির্বাচনি প্রচারণায় দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিণত হয়েছিল, সবার ওপরে ছিল অর্থনীতি। রোববারের ভোটে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে শীর্ষ দুই প্রার্থীকে নিয়ে হবে রান-অফ ভোট।

প্রেসিডেন্টের পদের লড়াইয়ে নামা চার প্রার্থীর মধ্যে মুহররম ইনসে তিন দিন আগে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন; তবে তার আগেই ব্যালট ছাপা শেষ হয়ে যাওয়ায় তার নাম বাদ দেওয়া সম্ভব হয়নি।

শনিবার প্রচারের শেষ পর্যায়ে ৭৪ বছর বয়সি কিলিচদারোগলু আধুনিক সেক্যুলার তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্কের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। আর ৬৯ বছর বয়সি এরদোগান প্রচার শেষ করেন ইস্তাম্বুলের হায়া সোফিয়ায় মাগরিবের নামাজ পড়েন।

তুরস্কের নির্বাচনের দিকে মুসলিম বিশ্ব তাকিয়ে আছে, নামাজ শেষে উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে একে পার্টির নেতা এরদোগান এমন মন্তব্য করেছেন।