গরমে পান্তা ভাত খাওয়ার উপকারিতা

আফরিন মিম
মার্চ ৩০, ২০২২

Share Now

গরম যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। সেইসঙ্গে বাড়ছে মানুষের হাঁসফাঁস। গরমে খাবার খাওয়া থেকে শুরু করে পোশাক নির্বাচন, সবকিছুই করতে হয় বুঝেশুনে। কারণ এসময় স্বস্তিটাই মূখ্য হয়ে দাঁড়ায়। চাইলেই মুখরোচক যেকোনো খাবার খেয়ে নেওয়া যায় না, কারণ তাতে হজমে গোলমাল হওয়ার ভয় থাকে। বাইরে যেভাবে গরম বাড়ছে তাই এই সময় পেট ঠান্ডা রাখা সবচেয়ে জরুরি। এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে পান্তা ভাত। কীভাবে? চলুন জেনে নেওয়া যাক-

পান্তা ভাত কী?

আমরা যে ভাত খাই তার পুরোটাই শর্করা। সেই ভাত যদি পানি দিয়ে রাখেন তবে বিভিন্ন গাজনকারী ব্যাক্টেরিয়া বা ইস্ট এই শর্করা ভেঙ্গে তৈরি করে ইথানল ও ল্যাকটিক অ্যাসিড। এই অ্যাসিড তৈরির ফলে ভাতের অম্লত্ব বেড়ে যায়। যে কারণে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক ভাত নষ্ট করতে পারে না। এই পানিতে ভিজিয়ে রাখা ভাতকেই বলা হয় পান্তা ভাত।

পান্তা ভাতের পুষ্টিগুণ

১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখার পরে ১০০ গ্রাম পান্তা ভাতে আয়রনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭৩.৯১ মিলিগ্রাম, সমপরিমাণ গরম ভাতে আয়রন পাবেন মাত্র ৩.৪ মিলিগ্রাম। পটাশিয়াম বেড়ে হয় ৮৩৯ মিলিগ্রাম এবং ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বেড়ে হয় ৮৫০ মিলিগ্রাম। এদিকে ১০০ গ্রাম গরম ভাতে থাকে মাত্র ২১ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। পান্তা ভাতে সোডিয়াম কমে ৩০৩ মিলিগ্রাম হয়, যেখানে একই পরিমাণ গরম ভাতে সোডিয়াম থাকে ৪৭৫ মিলিগ্রাম।

ভিটামিনের উৎস

শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিনের উপস্থিতি রয়েছে পান্তা ভাতে। এটি  ভিটামিন বি-৬ এবং ভিটামিন বি-১২ এর ভালো উৎস। আর এই দুই ভিটামিনই আমাদের সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। তাই গরমে পান্তা ভাত খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। 

শরীর সতেজ রাখে

গরমে ঘামের কারণে আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় অনেক উপাদান বেরিয়ে যায়। সেই অভাব মেটানো জরুরি। নয়তো নিস্তেজ হয়ে পড়ার ভয় থাকে। গরমে শরীরকে ভেতর থেকে ঠান্ডা ও সতেজ রাখতে কাজ করে পান্তা ভাত। এটি শরীরে পানির অভাব মেটানোর পাশাপাশি তাপমাত্রার ভারসাম্য রাখতেও কাজ করে।

শক্তি যোগায়

সারাদিন কাজের জন্য আপনাকে শক্তি দেবে পান্তা ভাত। এটি খেলে শরীর হালকা লাগে এবং কাজের ক্ষেত্রে শক্তি বেশি পাওয়া যায়। এটি গাঁজানো বা ফারমেন্টেড খাবার। আমাদের শরীরের জন্য উপকারী অনেক ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায় এই ভাতে।

পেটের পীড়া দূর করে

নিয়মিত পান্তা ভাত খেলে তা পেটের নানা সমস্যা দূর করতে কাজ করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে শরীরকে সজীব করে তোলে। হজম ভালো হয় যে কারণে আরও অনেক অসুখ থেকে দূরে থাকা সহজ হয়।