গুমের দায় সরকারকেই নিতে হবে: ফখরুল

মোঃ আশিকুর রহমান
আগস্ট ৩০, ২০২১

Share Now

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গুম হওয়া পরিবার গুলোর অসহায়ত্বের দায় সরকারকেই নিতে হবে।

সোমবার (৩০ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক গুম বিরোধী দিবস উপলক্ষে বিএনপির মানবাধিকার সেলের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ওই পরিবার গুলোর অসহায়ত্বের দায় কে নেবে? এখানে অনেকে আছেন- ৯ থেকে ১০ বছর ধরে তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের সাবেক সংসদ সদস্য সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী, ঢাকার কমিশনার চৌধুরী আলমসহ আজকে আমাদের ৫ শতাধিক নেতাকর্মী গুম হয়ে গেছেন গত ৮-৯ বছরে।

ইলিয়াস আলীর মেয়ে এখন বড় হয়েছে, সে এখনও দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকে কখন তার বাবা ফিরে আসবে। বাচ্চাদের আহাজারি আপনারা শুনলেন। আপনারা (সরকার) বলেন- এগুলো (গুম) হয় না। তাহলে তারা গেল কোথায়? তাদের খুঁজে বের করার দায়িত্ব তো আপনাদের। তাদের পরিবারের কাছে ফেরত দিন। অবশ্যই আপনাদের দিতে হবে। নয়তো ইতিহাসের কাঠগড়ায় আপনাদের তার জবাব দিতে হবে। একদিন জনগণের আদালতে আপনাদের বিচার করা হবে।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া গুম হওয়া পরিবার গুলোর সদস্যদের আবেগময় আকুতিতে উপস্থিত অনেককে অশ্রুসজল হতে দেখা যায়। কেউ কেউ তার বাবার ছবি, কেউ তার ভাইয়ের ছবি, কেউ তার সন্তানের ছবি, কেউ তার স্বামীর ছবি হাতে নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয়।

ফখরুল বলেন, এমন দেশ এমন রাষ্ট্র আমরা বানিয়েছি যেখানে আমার সন্তানেরা নিখোঁজ হয়ে যাবে, তাদের হদিস কেউ পাবে না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী লোকেরা তাদের তুলে নিয়ে যাবে আর সরকার তার কোনো জবাব দেবে না। আমরা তো আমাদের চোখের পানি রাখতে পারি না। তোমাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে বলতে চাই, আমরা আর কিছু না করতে পারি, আমরা শুধু তোমাদের পাশে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলতে চাই যে, আমার ভাইকে, আমার বাবাকে, আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দাও।

তিনি বলেন, আমরা এ অবস্থা থেকে মুক্তি চাই। আসুন আজকের এই দিনে আমরা গুমের যে কালচার তৈরি হয়েছে সেই কালচারকে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য সোচ্চার হই। আমরা জোর গলায় বলে উঠি- বন্ধ করো, তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দাও।

বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, গুম হওয়া আনোয়ার হোসেনের মেয়ে রাইসা, মো. সোহেলের মেয়ে সাবা, মো. কাউসারের মেয়ে মীম বক্তব্য রাখেন।