জ্বালানি সনদ চুক্তি বিরোধিতার আহ্বান ক্যাবের

তৌহিদুল ইসলাম
আগস্ট ৪, ২০২২

Share Now

জ্বালানি সনদ চুক্তির আইনি কাঠামো বেশ একপেশে ও ভারসাম্যহীন। এটা এক রকমের দ্বন্দ্ব নিরসনের নামে আইনি ফাঁদ স্বাগতিক রাষ্ট্রের জন্য। তাই সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা প্রশমনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের দায়মুক্তি আইন-২০১০ এর বিরোধিতা যেমন করতে হবে তেমনি বাংলাদেশ যেন জ্বালানি সনদ চুক্তিতে স্বাক্ষর না করে তার আহ্বান জানান বক্তারা।

বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) আয়োজিত জ্বালানি রূপান্তর নীতি বাস্তবায়নে জ্বালানি সনদ চুক্তির ভূমিকা শীর্ষক এনজিও প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ADVERTISEMENT

সংলাপে ক্যাবের সিনিয়র সহ সভাপতি অধ্যাপক এম শামসুল আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান।

তানজীমউদ্দিন খান বলেন, জ্বালানি সনদ চুক্তি ক্যাব প্রস্তাবিত জ্বালানি রূপান্তর নীতি বাস্তবায়নকে অসম্ভব করে তুলতে পারে। শুধু বিদেশি বিনিয়োগকারীর স্বার্থ রক্ষায় এই আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামোটি একপেশেভাবে কার্যকর। তাই জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় জ্বালানি সনদ চুক্তির বিরোধিতা করা মূল কাজ। রাষ্ট্র কিছু প্রতিষ্ঠানের সুবিধার জন্য দেশের পরিবেশ প্রতিবেশ নষ্ট করে দিচ্ছে। এটা হতে পারেনা। এই জ্বালানি চুক্তি স্বাক্ষরে আরো চিন্তা করা দরকার। এই চুক্তিকে না বলা জরুরি। তাই রাষ্ট্র যেন এই চুক্তিতে স্বাক্ষর না করে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, পাকিস্তান আমলের ২২ পরিবারের মতো বর্তমানেও সরকারকে ব্যবহার করে কিছু ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী সুবিধা নিচ্ছে। এ ধরনের জ্বালানি সনদ চুক্তি করলে পুনরায় তাদেরকে সুযোগ করে দেওয়া হবে। আমরা দিন জ্বালানি সেক্টর চালানোর সক্ষমতা আমরা হারিয়েছি। আমরা একটি পাওয়ার প্লান্ট চালাতে পারি না, বিদেশ থেকে প্রশিক্ষিত কর্মী আনতে হয়। আমাদের সক্ষমতা শুধু দেশের জ্বালানি খাতের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া।

ADVERTISEMENT

তিনি বলেন, যে টাকা গ্যাস উৎপাদন ও উত্তোলনে খরচ করার কথা সেটি ব্যবহার করা হয়েছে আমদানিতে। জনগণের টাকা এভাবে খরচ করা লুণ্ঠনের মতো। সমুদ্রের গ্যাস উত্তোলন করতে না পারলে স্থলের গ্যাস উত্তোলন করা যায় বাপেক্সকে দিয়ে। কিন্তু সেটি করা হচ্ছে না। করা হচ্ছে শুধু আমদানি যার ফলে মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ক্ষতিকর ফলের শিকার হচ্ছে জনগণ। ভোক্তার অধিকার রক্ষায় কিছুই করা হচ্ছে না যার ফলাফল মানুষ সক্ষমতা হারাচ্ছে। আর দেশে বিদ্যুৎ জ্বালানির সংকট।

তিনি আরও বলেন, আমরা গ্যাস নিয়ে ২৫, বিদ্যুৎ নিয়ে ১১ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে ৪টি প্রস্তাব করেছি। প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের জন্য করণীয় হলো- সরকার জ্বালানি খাতকে বাণিজ্যিক খাতে রূপান্তর করতে পারবে না। সরকার খাদ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যে নীতি ব্যবহার করে তেমনি গ্যাস বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতেও একই নীতি গ্রহণ করতে হবে। জ্বালানি প্রতিষ্ঠানে আমলাদের সরিয়ে দিয়ে দক্ষ প্রশাসক নিয়োগ দিতে হবে।

সংলাপে অংশগ্রহণ করেন প্রকৌশলী শুভ কিবরিয়া, এড. হুমায়ুন কবির, ক্যাবের কোষাধ্যক্ষ ড. মনজুর ই খোদাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত এনজিও সংগঠনের প্রতিনিধিরা।