তিস্তার বাঁধ ভেঙে হুমকিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৪০ পরিবার

আফরিন মিম
আগস্ট ৩০, ২০২১

Share Now

নীলফামারীতে তিস্তার বাঁধ ভেঙে ঝুনাগাছ চাপনী ইউনিয়নে চার গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অব্যাহত ভাঙনের কবলে ইউনিয়নের কুটিপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পটি হুমকির মুখে রয়েছে। এসব পরিবারের মধ্যে সোমবার শতাধিক পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছে।

তিস্তার পানির তোরে ব্যারাজের ভাটিতে ঝুনাগাছ চাপনী ইউনিয়নের ভেন্ডাবাড়ী গ্রামে নদীর দুই নম্বর স্পার বাধটির ভাঙন দেখা দেয় রবিবার সকালে। সেদিন পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুর বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করলেও মধ্য রাতে বাঁধের ২০০ ফিট ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। এতে সোমবার ইউনিয়নের ভাবনচুর, দক্ষিণ সোনাখুলি, ভেন্ডাবাড়ি ও কুটিপাড়া গুচ্ছগ্রাম (আশ্রয়ণ প্রকল্প) প্লাবিত হয়। তলিয়ে যায় অসংখ্য আবাদী জমি।

ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, বাঁধ ভেঙে ইউনিয়নের ভাবনচুর, দক্ষিণ সোনাখুলি, ভেন্ডাবাড়ি ও কুটিপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ এক হাজার পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। ভাঙন অব্যাহত থাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পটি হুমকির মুখে রয়েছে। ওই আশ্রয়ণে ৪০ পরিবারের বসবাস। সোমবার এসব গ্রামের শতাধিক পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছে।

ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খাঁন বলেন, ‘তিস্তার পানি বাড়া-কমায় ইউনিয়নের পূর্ব ছাতনাই ও ঝাড়শিংহেরশ্বর গ্রামের এক হাজার ১৫০ পরিবার বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। এখন নদীর পানি কমার সঙ্গে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে ঝাড়শিংহেরশ্বর গ্রামের আটটি পরিবারের বসত বাড়ি ও দুই গ্রামের প্রায় দেড় একর আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ময়নুল হক বলেন, ‘তিস্তা বন্যায় ইউনিয়নের টাপুর চরে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁধটির ভাঙন বৃদ্ধি পায়। তিন কিলোমিটারের ওই বাঁধটির এ পর্যন্ত ৭০০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বালুর বস্তা ফেলেও বাঁধটি রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা বলেন, নদীর পানি উঠা-নামা করায় ভাঙন বাড়ছে। রবিবার তিস্তা ব্যারাজের ভাটিতে দুই নম্বর স্পার বাঁধটিতে বালুর বস্তা ফেলে রক্ষা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু মধ্য রাতে প্রায় দুই শ ফিট ভেঙে গেছে।’ সোমবার বেলা ১২টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচে ছিল বলে জানান তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে সোমবার সকাল ছয়টায় নদীর পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় ৩২ সেন্টিমিটার এবং বেলা ১২টায় ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার।