‘নিজের জীবনের জন্য আমার কখনো মায়া নেই’

তাহানুল মারুফ
মে ১৫, ২০২৩

Share Now

আইন ও প্রশাসন কোর্সের নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজের জীবনের জন্য আমার কখনো মায়া নেই। দেশের জনগণের সেবা করাই বড় কাজ।

আজ সোমবার (১৫ মে) দুপুরে বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে ১২৭, ১২৮ এবং ১২৯তম আইন ও প্রশাসন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের বেতন-ভাতা যা কিছু সব জনগণের কাছ থেকে আসে। তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করা সকলের কর্তব্য। এই কথা মনে রেখে সব সময় চলতে হবে। যারা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, শপথ নিয়েছেন তাদেরকে এটুকু বলব, দেশের জনগণের সেবা করা এটাই সবচেয়ে বড় কাজ। আজকে বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে তার গতির যেন অব্যাহত থাকে। আমার এইটুকু দাবি।

তিনি আরও বলেন, যারা আমাদের স্বাধীনতা চায়নি তাদের ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত চলছে চলবে। এ নিয়ে আমি কখনো পরোয়া করিনি। নিজের জীবনের জন্য আমার কখনো মায়া নেই। আমার একটাই কাজ, বাংলাদেশকে গড়ে তুলে দিয়ে যাওয়া, বাংলাদেশের মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে জীবন দিতে চাই।

সরকারপ্রধান বলেছেন, হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে ‘৭৫ সালের পর ক্ষমতার পালাবদল শুরু হয়। ২১ বছর এ দেশে মানুষের কোনো ভোটের অধিকার ছিল না। বেঁচে থাকার অধিকারও ছিল না। ক্ষমতা দখল রাখার এবং নিজেদের ভাগ্য গড়তেই তারা ব্যস্ত ছিল। দেশ সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণাই ছিল না। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার সুযোগ পায়। ৯৬ সালে আমরা সরকার গঠন করি। জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে এই দেশ গড়ার কাজ শুরু করি। তখন দেশের অবস্থা খুবই খারাপ। আমাদের রিজার্ভ খুব কম। আমাদের খাদ্যে ৪০ মেট্রিক টন ঘাটতি ছিল। দারিদ্র্যের হার একেবারে উচ্চ পর্যায়ে। মানুষের এক বেলা খাবার জোটানো কঠিন ছিল। তেমন একটি পরিস্থিতি আমরা সরকার গঠন করি। আমরা স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে পুনর্গঠন করি। সেসময় আমরা গবেষণা ওপর খুব জোর দিয়েছিলাম।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকারে আসার পরে আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রকে বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দেই। আজকে এত টেলিভিশন, বিমান, হেলিকপ্টার সার্ভিস, ব্যাংক, বিমা থেকে শুরু করে ক্ষেত্রকে বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দেই। যাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়, বিনিয়োগ হয়, মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন হয়। সেই ব্যবস্থাটাই আমরা নিয়েছিলাম। সব সূচকেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছিল। বাংলাদেশে মাত্র ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো, আমাদের গৃহীত পদক্ষেপে সেটির ৪৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করেছিলাম। আমাদের স্বাক্ষরতার হার শুধুমাত্র ৪৫ ভাগ। সেটিকে আমরা ৬৫.৫ ভাগে উন্নীত করতে পারি।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, মহকুমাগুলোকে জেলায় রূপান্তরিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। আর প্রত্যেক জেলায় উন্নয়নের জন্য গভর্নর নিয়োগ করে সব প্রশাসনিক ব্যবস্থা নতুন ধারায় সূচনাও করেছিলেন তিনি। যাতে উন্নয়ন তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত হতে পারে, সেই ব্যবস্থাটাই তিনি নিয়েছিলেন। আমরা তার পদক্ষেপ অনুসরণ করেই কার্যক্রম পরিচালনা করছি। বর্তমান সরকারও স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে চলেছে।

তৃণমূল পর্যন্ত উন্নয়ন করাই সরকারের লক্ষ্য মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের উন্নয়নের লক্ষ্যই ছিল তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত উন্নয়ন করা, এটা শুধু শহরভিত্তিক মানুষের জন্য না। আর তৃণমূল পর্যায়ে মানুষের উন্নতি যেন হয়, তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানো, মাথাপিছু আয় বাড়ানো এবং তাদের জীবনযাত্রার মান বাড়বে সেভাবেই সব পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করা হয়। ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করার পর এখনো আমরা ক্ষমতায় আছি, সেভাবেই কাজ করে যাওয়া হচ্ছে।