বজ্রপাতে প্রতিবছর বাংলাদেশে ২৬৫ জনের মৃত্যু

তাহানুল মারুফ
মে ৭, ২০২৩

Share Now

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাবে বেড়েছে বজ্রপাতে মৃত্যুর হার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাতে মৃত্যুর শিকার বাংলাদেশে। বিশ্বে বজ্রপাতে যত মানুষ মারা যায়, তার এক-চতুর্থাংশই বাংলাদেশে। দেশের হাওড়, বাঁওড় ও বিলপ্রবণ জেলায় বজ্রপাতের মৃত্যুর সংখ্যা বেশি।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং বেসকারি সংগঠন ‘ডিজাস্টার ফোরাম’র তথ্য মতে, প্রতি বছর গড়ে বজ্রপাতে ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়। বজ্রপাতে মারা যাওয়া ৭০ শতাংশই কৃষক। সাড়ে ১৪ শতাংশ বাড়ি ফেরার পথে এবং গোসল কিংবা মাছ শিকারের সময় ১৩ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে। তবে শহরের ভবনগুলোতে বজ্রপাত প্রতিরোধক দণ্ড থাকায় হতাহতের সংখ্যা কম। ২০১১ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ১২ বছরে দেশে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১৬২ জনের। এপ্রিল ও জুনে বজ্রপাত বেশি হয়।

জানা গেছে, মার্চ থেকে অন্তত তিন মাস বোরো আবাদে হাওড়ে বিপুলসংখ্যক মানুষ কৃষিকাজে নিয়োজিত থাকে। ওই সময় বজ্রপাতে মৃত্যু বেশি ঘটে। এদিকে দেশের সবচেয়ে বেশি বজ্রপাতপ্রবণ এলাকা সুনামগঞ্জে হতাহত কমাতে বসানো হয়েছে ২৪টি বজ্রনিরোধক লাইটনিং অ্যারেস্টার।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সিলেট অঞ্চলের উপপরিচালক ড. মোহাম্মদ কাজী মজিবুর রহমান, দেশে বজ্রপাতে মৃত্যু অনেক বেড়েছে। এ জন্য সরকার থেকে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ দুর্যোগ মোকাবিলায় কৃষি বিভাগও নিয়েছে মহাপরিকল্পনা।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের প্রধান ড. ইফতি খাইরুল আমিন বলেন, দেশে বজ্রপাতে মৃত্যুরোধ করতে প্রযুক্তির দিকে মনোযোগী হতে হবে। যাতে পূর্বাভাস পাওয়া যায়। এ ছাড়া মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, যখনই আবহাওয়ার পূর্বাভাসে শুনবেন বৃষ্টি হবে, তখনই বজ্রপাত হবে ধরে নিতে হবে। বিশেষ করে এপ্রিল, মে ও জুনের শুরু পর্যন্ত এমন আবহাওয়া থাকবে। বজ্রপাত থেকে বাঁচতে খোলা জায়গায় না থেকে নিরাপদ জায়গায় থাকতে হবে। এ সময় বড় গাছের নিচে থাকাটা সবচেয়ে অনিরাপদ। কারণ বজ্রপাত উঁচু কিছুর ওপরেই আঘাত হানে।

বজ্রপাতে ২০১১ সালে ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালে দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়ায় ৩৬২ জনে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ২০১৬ সালে বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করে।