ভারতের জাতীয় পশু গরু! : এলাহাবাদ হাইকোর্ট

তৌহিদুল ইসলাম
সেপ্টেম্বর ২, ২০২১

Share Now

গরুকে ভারতের জাতীয় পশু হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত।

উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদ হাইকোর্ট বুধবার এক রায়ের পর্যবেক্ষণে এই মত দেন বলে বৃহস্পতিবার হিন্দুস্তান টাইমসহ একাধিক সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে।

আদালত বলেছেন, গো-রক্ষা হিন্দুদের মৌলিক অধিকার হওয়া উচিত। ভারতীয় সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো গরু। সেইমতো কেন্দ্রীয় সরকারের আইন তৈরি করা উচিত।

বুধবার উত্তরপ্রদেশের নতুন গোহত্যা সংক্রান্ত আইনে গ্রেপ্তার হওয়া এক আসামির জামিনের আবেদন খারিজ করে মামলার শুনানিতে এসব কথা বলেন বিচারপতি শেখর যাদবের একক বেঞ্চ।

আদালত বলেন, বেদ এবং মহাভারতের মতো প্রাচীন লেখায় গরুকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ তুলে হিসেবে ধরা হয়েছে। যা ভারতের সংস্কৃতিকে তুলে ধরে এবং যে কারণে ভারত পরিচিত।

বিচারপতি যাদবের মতে, গরুকে মৌলিক অধিকার প্রদানের জন্য সংসদে বিল পেশ করা উচিত। যারা গরুর ক্ষতি করছেন, তাদের শাস্তি দেওয়ার জন্য কঠোর আইন প্রণয়নেরও আহ্বান করেছেন হাইকোর্ট।

১২ পৃষ্ঠার রায়ে বিচারপতি যাদব বলেছেন, ‘আমরা জানি যে যখন কোনও দেশের সংস্কৃতি এবং বিশ্বাস আঘাতপ্রাপ্ত হয়, তখন সেই দেশ দুর্বল হয়ে পড়ে।’

মামলার প্রসঙ্গে হাইকোর্ট জানিয়েছেন, জাভেদ (৫৯) নামের ওই ব্যক্তি গরু চুরি করেছেন, খুন করেছেন, মুণ্ডচ্ছেদ করেছেন এবং গো-মাংস রেখেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে হওয়া মামলায় তার জামিন আবেদন খারিজ করা হয়। অভিযুক্তকে যদি জামিনে মুক্ত করা হয়, তাহলে আবারও একই অপরাধ করবেন।

হাইকোর্ট জানিয়েছেন, শুধু হিন্দুরাই যে গরুর গুরুত্ব বুঝতে পেরেছেন, তা নয়। মুসলিম শাসকরাও নিজেদের আমলে গরুকে ভারতীয় সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, বাবর, হুমায়ুন এবং আকবর ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় গো-হত্যার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিলেন। মাইসোরের শাসক হায়দার আলি গো-হত্যাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছিলেন।

বিচারপতি যাদবের পর্যবেক্ষণ, কেন্দ্রের উচিত সংসদে বিল এনে গোরক্ষাকে হিন্দুদের মৌলিক অধিকার হিসাবে ঘোষণা করা। গরুর ভাল হলে তবেই দেশের ভালো হবে।

ভারতে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশে নতুন মাত্রা পেয়েছে ‘গো রাজনীতি’। গো রক্ষার নামে গণপিটুনি, হানাহানি এমননি বহু মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে।