মাটির নিচে বামনদের বাস। নিজেদের এক স্বর্গরাজ্য তৈরি করে বামনরা নিজেদের অস্তিত্ব গড়েছে সেখানে। বছরের পর বছর ধরে মাটির নিচে বসবাস, থাকা, খাওয়া সবই করছেন তারা।
জানলে অবাক হবেন, বামনদের এই রহস্যময় গ্রামটি প্রায় দেড় হাজার বছরের পুরোনো।
ইরানের পূর্ব খোরাসান প্রদেশের প্রাচীন এই গ্রামের নাম মাখুনিক। এই গ্রামটি লিলিপুটদের গ্রাম হিসেবেই পরিচিত। এই গ্রামের সব ঘরগুলোই মাটির তৈরি।
পর্যটকদের কাছে বেশ আকর্ষণীয় এক স্থান হলো এই মাখুনিক গ্রাম। লিলিপুটদের শহর ও তাদের জীবন ব্যবস্থা দেখতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ সেখানে ভিড় জমান। জানা যায়, সেখানকার বাসিন্দারা আফগানিস্তানের নাগরিক। কয়েকশ’ বছর আগে তারা মাখুনিক গ্রামে বসবাস শুরু করেন।
এ গ্রামের বাসিন্দাদের উচ্চতা সর্বোচ্চ ৫০ সেন্টিমিটার বা ১ ফুট ৭ ইঞ্চি। বিশেষজ্ঞরা জানান, বামন বাসিন্দাদের মুষ্টিমেয় এখনও সেখানে বসবাস করে।
তারা নিজেদের মধ্যে বিবাহ, অপুষ্টিসহ পারদ মেশানো পানি পান করার ফলে পুরো গ্রামের বাসিন্দারাই বামন আকৃতির হয়েছেন।
থ্যপ্রযুক্তির এ যুগেও ওই গ্রামের বাসিন্দাদের ঘরে একটি টিভিও নেই। তাদের বিশ্বাস টিভি রাখা শয়তানের কাজ। গ্রামের বাসিন্দাদের অধিকাংশই গবাদিপশু পালন ও কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তাদের কেউ কেউ গ্রামের কাছে একটি খনিতে কাজ করে।
এমনকি এ গ্রামের কেউই ধূমপান করেন না। এখানে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের অধিকাংশই গম, রসুন, শালগম, বিটরুট, গাজর, টমেটো, পেঁয়াজ ও জাফরান। গ্রামের বাসিন্দারা ফারসিতে স্থানীয় বিশেষ বাচনভঙ্গিতে কথা বলেন।
এই গ্রামে বর্তমানে ৭০০ বামন বাসিন্দা বাস করেন। তারা অবশ্য তাদের পূর্বপুরুষদের মতো অতটা খাটো নয়। তবে তাদের বাড়িগুলো পূর্বপুরুষদের মতোই।
১৯৪৬ সালে গ্রামটির অস্তিত্ব আবিষ্কার হয়। ধীরে ধীরে পাহাড়ের ভেতর দিয়ে রাস্তাও তৈরি হয়। বাইরে থেকে যানবাহনের যাতায়াত শুরু করে। মানুষের জীবনযাত্রাও কিছুটা পাল্টাতে থাকে।