রোজার অপার্থিব উপকার

আফরিন মিম
এপ্রিল ৫, ২০২২

Share Now

পবিত্র রমজান মাস অত্যন্ত মোবারক মাস। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যে ‘তোমাদের মাঝে রমজান উপস্থিত হয়েছে, যা একটি বরকতময় মাস। মহান আল্লাহ তোমাদের ওপর এই মাসের রোজা ফরজ করেছেন। এ মাসের আগমনে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয়, আর আল্লাহর অবাধ্য শয়তানদের গলায় লোহার বেড়ি পরানো হয়।

এ মাসে একটি রাত রয়েছে, যা এক হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। যে ব্যক্তি সে রাতের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত রয়ে গেল সে প্রকৃত বঞ্চিত রয়ে গেল।’ (নাসায়ি, হাদিস : ২১০৬)

নিম্নে রোজার কিছু অপার্থিব উপকার তুলে হলো—

রোজা ধৈর্যের প্রতীক : পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন। রোজা হলো ধৈর্যের প্রতীক। হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, সুলাইম গোত্রের এক ব্যক্তি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমার হতে অথবা তাঁর হতে এসব বাক্য গুনে গুনে বলেন, …রোজা  ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার অর্ধেক এবং পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫১৯)

রোজাদারকে ক্ষমা করা হয় : আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানসহ পুণ্যের আশায় রমজানের রোজা পালন করে, তার পূর্বের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। (বুখারি, হাদিস : ৩৮)

জাহান্নাম থেকে মুক্তি : আবু সাঈদ আল খুদরি (রা.) বলেন, আমি মহানবী (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে বান্দা আল্লাহর রাস্তায় একদিন রোজা রাখে, আল্লাহ তাআলা তার চেহারাকে জাহান্নামের আগুন থেকে ৭০ বছরের পথ দূরে রাখবেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬০৩)

জান্নাতে রোজাদারদের বিশেষ সম্মাননা : সাহল (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেন, জান্নাতের রাইয়্যান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন সওম পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তাদের ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেওয়া হবে, রোজা পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে। তারা ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে, যাতে করে এ দরজাটি দিয়ে আর কেউ প্রবেশ না করে।’ (বুখারি, হাদিস : ১৮৯৬)

রোজার প্রতিদান আল্লাহ নিজ হাতে দেবেন : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর মর্জি হলে আদম সন্তানের প্রতিটি সৎকাজের প্রতিদান ৭০ গুণ থেকে সাত শত গুণ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। আল্লাহ বলেন, তবে রোজা ব্যতীত, তা আমার জন্যই (রাখা হয়) এবং আমিই তার প্রতিদান দেব। সে তার প্রবৃত্তি ও পানাহার আমার জন্যই ত্যাগ করে। রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ, একটি আনন্দ তার ইফতারের সময় এবং আরেকটি আনন্দ রয়েছে তার প্রভু আল্লাহর সঙ্গে তার সাক্ষাতের সময়। রোজাদার ব্যক্তির মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে কস্তুরীর ঘ্রাণের চেয়েও অধিক সুগন্ধময়।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬৩৮)

উল্লিখিত হাদিসে ‘রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ, একটি আনন্দ তার ইফতারের সময়’ এর ব্যাখ্যায় অনেকে বলেছেন, রোজাদারের দোয়া কবুল করা হয়।

-কালের কন্ঠ