শান্ত হত্যাকাণ্ডের মূলহোতাসহ গ্রেফতার ৩

তাহানুল মারুফ
এপ্রিল ১০, ২০২২

Share Now

ময়মনসিংহে শরীফ চৌধুরী ওরফে শান্ত হত্যাকাণ্ডের একদিনের মধ্যে মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। শুক্রবার (৮ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও চাঁদা ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে শান্তকে হত্যা করা হয়েছে বলে গ্রেফতারকৃতরা দাবি করেন।

শনিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ময়মনসিংহের এসপি গৌতম কুমার বিশ্বাস।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, গত ৬ মার্চ দিবাগত রাতে চরপাড়ায় চৌধুরী ক্লিনিকের গলিতে শরীফ চৌধুরী ওরফে শান্তকে ছুরিকাঘাতে নৃশংসভাবে হত্যা করে ঘাতকচক্র পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পিবিআইয়ের অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদারের দিকনির্দেশনায় ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাসের সহযোগিতায় ময়মনসিংহ টিম ছায়া তদন্ত শুরু করে।

তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন, বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে নিবিড় পর্যালোচনায় হত্যাকাণ্ডে জড়িতদেরকে শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে পিবিআইয়ের চৌকষ টিম পিবিআই হেডকোয়ার্টার্স এলআইসির সহায়তায় দ্রুততম সময়ে খুনিচক্রের অবস্থান নির্ণয় করে। খুনিচক্রটি বার বার তাদের অবস্থান পরিবর্তন ও নিজেদেরকে আত্মগোপনের চেষ্টা করে। চক্রটির সব চেষ্টা ব্যর্থ করে শুক্রবার ভোরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে শান্ত হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা রাকিবুল হাসান তপু, মো. শান্ত ইসলাম ও আরিফুজ্জামান আরিফকে গ্রেফতার করে। পরে গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্য মতে পরাণগঞ্জ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিসহ আলামত উদ্ধার করে পিবিআই।

গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস আরও জানান, নিহত শরীফ চৌধুরী শান্ত ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিরা পরস্পর বন্ধু এবং এলাকায় একত্রে চলাচল করত। এছাড়াও তারা চরপাড়া এলাকার ফুটপাতে অস্থায়ী দোকান থেকে সাপ্তাহিক চাঁদা সংগ্রহ করত। গত ১০/১৫ দিন আগে নিহত শান্ত তার বন্ধু-বান্ধবদের ছেড়ে আলাদা গ্রুপ তৈরি করে এবং চাঁদা আদায়ে নিজের আধিপত্য বজায় রাখে।

এমনকি বন্ধুদেরকে তার গ্রুপে যোগ দিতে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ ও হুমকি দেয় নিহত শান্ত। এতে চক্রটি প্রতিশোধপরায়ণ ও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এ নিয়ে তাদের মাঝে উত্তেজনা চলছিল। গত ৬ এপ্রিল রাতে চক্রটি ওঁৎ পেতে থাকা অবস্থায় চরপাড়া চৌধুরী ক্লিনিকের গলিতে শান্তকে একা পেয়ে অতর্কিত হামলা করে ও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। দ্রুত তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শুধুমাত্র চাঁদার টাকা নিয়েই এ হত্যাকাণ্ড না অন্য কোনো মোটিভ রয়েছে, এ সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে সবকিছু পরিষ্কার করে বলা সম্ভব। এছাড়া গ্রেফতারকৃতদের তথ্য মতে, এ হত্যাকাণ্ডে আরও দুইজনকে গ্রেফতারে পিবিআই টিম মাঠে রয়েছে বলে পলিশ সুপার দাবি করেন। এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদেরকে শনিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।