চুরির ঘটনা দেখে ফেলায় শিশুকে পিটিয়ে হত্যা, আটক ১

তৌহিদুল ইসলাম
অক্টোবর ১৯, ২০২১

Share Now

সাভারের আশুলিয়ায় টাকা চুরির ঘটনা দেখে ফেলায় এবং চুরির বিষয়টি বলে দেয়ায় ১১ বছরের এক শিশুকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে আটক করেছে আশুলিয়া থানা-পুলিশ।

সোমবার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সামিউল ইসলাম।

এর আগে রবিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকা থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহতের মো. ফেরদৌস (১১) শেরপুর জেলার সদর থানার মুন্সিপাড়া গ্রামের রইচ উদ্দিনের ছেলে। ফেরদৌস আশুলিয়ার পল্লিবিদ্যুৎ বালুর মাঠ এলাকায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থেকে আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনে হেলপার হিসেবে কাজ করত।

এ ঘটনায় মো. শাহ পরান হৃদয় নামে জানান ক্ল্যাসিক পরিবহনের একজন স্টাফকে আটক করেছে পুলিশ। মো. পারভেজ নামে জড়িত অপর এক হেলপার পলাতক রয়েছে।

নিহতের বড় বোন রুবিনা বেগম বলেন, আমার বাবা আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনের চালক। ছোট ভাই ফেরদৌস একটু চঞ্চল প্রকৃতির হওয়ায় তিন দিন আগে তাকে আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনে কাজে পাঠায়। রবিবার সকালে বাইপাইল এলাকার রাস্তা থেকে আমার ভাইয়ের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাসের হেলপার ও কন্ডাক্টর মিলে আমার ভাইকে হত্যার পর লাশ সড়কে ফেলে রেখে গিয়ে তারাই আবার পুলিশকে খবর দেয়।

থানা-পুলিশ জানায়, রাত ১২টার দিকে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে বাস নিয়ে বাইপাইল পৌঁছায়। পরে গাড়ির মধ্যে কন্ডাক্টর হৃদয় ও হেলপার পারভেজ ঘুমিয়ে পড়েন। এ সময় শিশু ফেরদৌসও গাড়িতেই ছিলেন। ঘুম ভাঙলে তার পকেট থেকে ৫০০ টাকা খোয়া গেছে বলে জানতে পারেন হৃদয়। এ সময় শিশু ফেরদৌস তার পকেট থেকে পারভেজ টাকা চুরি করেছে বলে জানায়।

পুলিশ আরও জানায়, একপর্যায়ে পারভেজ ও হৃদয়ের মধ্যে টাকার বিষয় নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। টাকা চুরির বিষয়ে বলে দেয়ার ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে পারভেজ শিশু ফেরদৌসকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে পারভেজ ও হৃদয় মিলেই নিহত ফেরদৌসের লাশ সড়কে ফেলে রেখে পুলিশকে দুর্ঘটনার খবর দেয়।

খবর পেয়ে সাভার হাইওয়ে পুলিশ প্রথমে ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও মরদেহে দুর্ঘটনার কোনো চিহ্ন না পাওয়ায় বিষয়টি থানা-পুলিশকে অবহিত করে। পরে ভোর রাতে আশুলিয়া থানা-পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় হৃদয়কে আটক করা গেলেও পারভেজ গা ঢাকা দেয়।

আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সামিউল ইসলাম বলেন, রাতেই এ ঘটনায় আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনের কন্ডাক্টর হৃদয়কে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে ৫০০ টাকা চুরির ঘটনা দেখে ফেলায় এবং তা বলে দেয়ায় ওই শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

তিনি আরও বলেন, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। একই সঙ্গে অভিযুক্ত পারভেজকে আটকের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।