কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
অনাবাদি পদ্মার চরে চিনা বাদাম চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের চাষিরা। পদ্মার বিস্তীর্ণ চরে চাষ করা সোনালী ফসল বাদাম ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। অর্থকরী এ ফসল চাষ করে সংসারের স্বচ্ছলতাও ফিরেছে চরবাসীর। তবে হঠাৎ করে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে অনেক চাষির বাদাম পানিতে ভেসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চলতি মৌসুমে কুষ্টিয়া জেলায় প্রায় একহাজার হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে। এরমধ্যে দৌলতপুরের বিস্তীর্ণ চরে চাষ হয়েছে ৮৮০ হেক্টর জমিতে। এক সময় পদ্মা নদীতে জেগে ওঠা বালুচর পড়ে থাকতো। যা চাষিদের কোন কাজেই আসতো না। এখন জেগে ওঠা পদ্মার চরে চাষিরা চিনা বাদাম চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পাওয়ায় এ অর্থকরী ফসলের চাষ পুরো চরে ছড়িয়ে পড়েছে। এ বছরও চরে বাদাম চাষ করে চাষিরা সাফল্য পেয়েছে। খরচ বাদ দিয়ে চাষিদের লাভও হচ্ছে। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে মাত্র ৫-৬ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় বাদাম হয়েছে ৫-৭ মন হারে। আর বিক্রয় হচ্ছে ২০০০ টাকা থেকে ২২০০টাকা মন দরে। তবে হঠাৎ করে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে অনেক চাষির বাদাম পানিতে ভেসে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তারা।
দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়রে কোলদিয়াড় গ্রামের বাদাম চাষি উজ্বল হোসেন জানান, সে এবছর চরের ৫বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছিল। বাদামের ফলনও ভাল হয়েছে। কিন্তু পদ্মা নদীতে আকস্মিক পানি বৃদ্ধির ফলে কিছু জমির বাদাম ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মুন্সিগঞ্জ গ্রামের বাদাম চাষি আব্দুল জব্বার জানান, এ বছর চরের ৭বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করে সে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে। বিঘা প্রতি ৫ হাজার টাকা খরচ করে প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ৬মন হারে বাদাম পেয়েছে সে। বাদাম চাষে চাষিদের প্রশিক্ষণ ও সরকারী প্রনোদনার পাশাপাশি চরাঞ্চলের বাদাম চাষিদের বাদাম চাষে সার্বিক সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম।
চরাঞ্চলের যেসব জমি অনাবাদি পড়ে থাকে সেসব জমি অর্থকরী সোনালী ফসল বাদাম চাষের আওতায় আনা গেলে চরবাসীর সারাবছরের আর্থিক চাহিদা পুরণ হবে, পাশাপাশি দেশের বাদামের চাহিদা মিটবে। আর এমনটাই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।